সাধারণ অর্থনৈতিক সম্পদ:

প্রত্যেক রাষ্ট্রের কিছু সাধারণ অর্থনৈতিক সম্পদ থাকে, যা রাষ্ট্রের কোষাগার সমৃদ্ধ করে। ইসলামি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও একই কথা। প্রতিটি ইসলামি রাষ্ট্রের অধীন কিছু সাধারণ অর্থনৈতিক সম্পদ থাকে, যার মালিকানা থাকে রাষ্ট্রের হাতে। যার মধ্যে সবিশেষ উল্লেখযোগ্য হলো, প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত চারণভূমি।  ইসলামি রাষ্ট্রে বাইতুল মালের অধীন এমন কিছু প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত চারণভূমি থাকে, যাতে যাকাত-সদকার উট এবং জিহাদের ঘোড়া চড়ে ঘাস-শস্য ও দানা-পানি খেতে পারে। পরিভাষায় এটাকে ‘হিমা’ বলা হয়। বর্ণিত রয়েছে, উমর রা. বাইতুল মালের মালিকানাধীন প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত চারণভূমির জন্য হুনাই নামের একজন লোক নিয়োগ করেন। উমর রা. তাকে ‘হিমা’র দেখভাল সংক্রান্ত এক সুদীর্ঘ নসিহতে বলেন, “যদি এই চতুষ্পদ জন্তুগুলো না থাকতো, যেগুলোতে চড়ে মুজাহিদরা আল্লাহর পথে জিহাদে বের হয়, তাহলে আমি মুসলমানদের কোনো শহর আর সংরক্ষণ করতাম না।”[1] উল্লেখ্য, ‘হিমা’ ছাড়াও ইসলামি রাষ্ট্রে আরো অনেক সাধারণ অর্থনৈতিক সম্পদ থাকে।

 

পরিচালনার বিধি ও নীতিমালা

প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের জন্য পরিচালনা সংক্রান্ত কিছু নিয়মনীতি ও বিধিবিধান থাকা অপরিহার্য। কিছু সাংবিধানিক নিয়মনীতি, কিছু আইনি নীতিমালা আর কিছু নির্বাহী প্রকল্প। বাইতুল মালের বিধি ও নীতিমালায় ব্যাপ্তি গভীরতা মৌলিকতা ও সার্বজনীনতা থাকে, যার আলোকে তা সুশৃঙ্খলভাবে আদর্শিক পন্থায় পরিচালিত হয়। বাইতুল মালের জন্য কিছু মোটা দাগের সাংবিধানিক নিয়মনীতি রয়েছে— যেমন “যাতে গোটা সম্পদ তোমাদের ধনীদের মধ্যে পুঞ্জীভূত না থাকে[2]”, “মুমিনদের রক্ত সমস্তরের[3]”, “আপনি বলুন, গনিমতের সম্পদ আল্লাহ এবং তার রাসুলের[4]” ইত্যাদি। রয়েছে কিছু শরয়ি নীতিমালার ধারা— যেমন যাকাতের বিধিবিধান, গনিমতের বিধিবিধান, যাকাত ফাই গনিমতের এক পঞ্চমাংশ ইত্যাদির সাথে সম্পৃক্ত বিধিবিধান। রয়েছে আরো কিছু প্রাতিষ্ঠানিক নীতিমালা— যেমনটা খারাজ হিমা সাদাকাহ ইত্যাদি বিষয়ে কর্মচারীদের উদ্দেশে উমর রা. এর প্রেরিত পত্রাবলি থেকে সুস্পষ্ট প্রতিভাত হয়।

 

বাইতুল মালের পাবলিক পলিসি

১. জনগণের অনুদান পরিশোধে অযথা কালক্ষেপণ না করা। দ্রুততর সময়ে হকদারকে তার হক আদায় করে দেয়া। কোনো একজন সাধারণ নাগরিকও যেনো ভোগান্তি-হয়রানির শিকার না হয়— সেদিকে সুগভীর দৃষ্টি রাখা। এমনকি ব্যবস্থাপনার কাজেও দেরি করে ফেলা অনুচিত। এটাই ছিলো প্রিয়নবি g এবং তার সাহাবিগণের সুন্নাহ। ইবনু যানজুওয়াহ তার কিতাবে আবু মুসা আশআরি রা.এর উদ্দেশে উমর রা. এর প্রেরিত একটি পত্র উদ্ধৃত করেন— “যখন আমার এই পত্র তোমার হস্তগত হবে, তখন তুমি আমাকে বছরের একটি দিনের কথা জানাবে, যেদিন মুসলমানদের বাইতুল মালে একটি দিরহামও অবশিষ্ট থাকবে না, একেবারে তা সাফ-পরিষ্কার থাকবে; যাতে করে আল্লাহ অবগত হন যে, আমি প্রত্যেক হকদারকে তার হক আদায় করেছি। হাসান বলেন, অনন্তর আল্লাহ তাকে ব্যাপক সামর্থ্য দান করলেন। তখন তিনি তার স্বচ্ছ অংশ গ্রহণ করলেন এবং পঙ্কিল অংশ পরিত্যাগ করলেন। এভাবেই তিনি তার মহান দুই সঙ্গীর সঙ্গে মিলিত হলেন।”[5]

ইমাম বায়হাকি তার ‘আসনুনান’ গ্রন্থে বর্ণনা করেন, উমর ইবনুল খাত্তাব রা. আব্‌দুল্লাহ ইবনুল আরকাম রা.কে বলেন, “তুমি প্রতিমাসে একবার মুসলমানদের বাইতুল মালে রক্ষিত সকল কিছু বণ্টন করে দেবে। তুমি প্রতি শুক্রবারে মুসলমানদের বাইতুল মালে রক্ষিত সকল কিছু বণ্টন করে দেবে।” এরপর বলেন, “তুমি প্রতিদিন মুসলমানদের বাইতুল মালে রক্ষিত সকল কিছু বণ্টন করে দেবে।” তখন কাওমের এক লোক বলে উঠলো, “হে আমিরুল মুমিনিন, আপনি যদি বিপদ এবং দুর্যোগের জন্য মুসলমানদের কিছু সম্পদ অবশিষ্ট রেখে দিতেন!” তখন উমর রা. সেই লোককে লক্ষ্য করে বললেন, “তোমার কণ্ঠে শয়তান কথা বলেছে। আল্লাহ আমাকে শয়তানের যুক্তি বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং আমাকে তার অনিষ্ঠ থেকে রক্ষা করেছেন। আমি তাকে প্রতিহত করার জন্য সে প্রস্তুতি নিচ্ছি, যে প্রস্তুতি রাসুলুল্লাহ g নিয়েছিলেন— আল্লাহ এবং তার রাসুলের আনুগত্য।”

উমর রা.এর উপরিউক্তি বাক্যে অনেক উপকারি বিষয় রয়েছে। যেমন— সম্পদ মানুষের হাতে প্রবহমান থাকবে, যা তাদেরকে দেশের আর্থ ও সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিয়মতান্ত্রিকভাবে অংশগ্রহণ করার ও বেশি থেকে বেশি অবদান রাখার স্পৃহা জাগাবে। তেমনিভাবে এর দ্বারা সরকারি চাকুরেদের অবৈধ উপার্জনের সুযোগও হ্রাস পাবে। তাছাড়া এভাবে রাষ্ট্র জনগণের চোখে মানুষের হক যথাযথভাবে আদায়ের ক্ষেত্রে এক অনুপম আদর্শে পরিণত হবে।

উল্লেখ্য, উপরিউক্ত ব্যয় জনগণের ব্যক্তিগত খাতগুলোর সাথে সম্পৃক্ত। রাষ্ট্রীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন, জনকল্যাণমূলক কাজ, সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেছনে ব্যয়িত খরচাদির খাত ভিন্ন; যা রাষ্ট্রের মৌলিক প্রয়োজনাবলির অন্তর্ভুক্ত।

২. মুসলমানদের বাইতুল মালে রক্ষিত সম্পদের মালিকও মুসলমান নাগরিকরাই। খলিফা এই সম্পদে বৈধ হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে তাদের প্রতিনিধি (ওকিল) মাত্র। এটাকে সাধারণ সম্পদ বলা হয় না। তাই রাষ্ট্র নিজেকে এই সম্পদ ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বাধীন ভাবতে পারে না। আর যেহেতু এই সম্পদে হস্তক্ষেপের একমাত্র পন্থা হলো শরিয়তের নির্দেশিত ধারা অনুসরণ করে নির্ধারিত খাতে ব্যয় করা, তাই আবু যর রা. মুআবিয়া রা. এর সিদ্ধান্তের ওপর কড়া আপত্তি জানিয়েছিলেন, যখন মুআবিয়া রা. রাষ্ট্রীয় কোষাগারে রক্ষিত সম্পদকে ‘মালুল্লাহ’ বা আল্লাহর সম্পদ নামে আখ্যায়িত করতে চেয়েছিলেন। কেননা খলিফার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হোক বা না হোক, এই নামকরণ আদতে একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত। তা বিলম্বিত হোক কিবা ত্বরান্বিত হোক— সর্বাবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই এর ওপর অনেক ফলাফল ও বিধান আবর্তিত হয়ে থাকে। তো আল্লাহর সম্পদ বলার অর্থ হচ্ছে, এই সম্পদকে সাধারণ সম্পদ বলে আখ্যায়িত করা, যার ফল হলো, এই সম্পদে হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করা। পরবর্তীতে মুআবিয়া রা.ও আবু যর রা.এর মত গ্রহণ করে সেই সম্পদকে মালুল মুসলিমিন নামে নামকরণ করেন।

উপরিউক্ত ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে রক্ষিত সম্পদ রাষ্ট্রের মালিকানাধীন জিনিস নয়, বরং তার মালিকানা জনগণের; রাষ্ট্র পরিচালকগণ জনগণের বৈধ প্রতিনিধি বৈ কিছু নন।

৩. রাজস্ব নির্ধারণের মূলনীতি বাইতুল মাল পরিচালনার ক্ষেত্রে বেশ প্রভাব বিস্তারকারী। তাই তা এক সুদৃঢ় ও সুসংহত সংবিধানের ভূমিকা রাখে। আয়ের জন্য যেমন রয়েছে নির্ধারিত উসুল ও নির্দেশনা, ব্যয়ের ক্ষেত্রেও একই কথা। যাকাতের নির্ধারিত কিছু খাত রয়েছে; সুরা তাওবায় যার আলোচনা এসেছে। গনিমতের এক পঞ্চমাংশের আলোচনা এসেছে সুরা আনফালে। সুরা হাশরে এসেছে ফাইয়ের আলোচনা। অন্যান্য বিষয়গুলোর ক্ষেত্রেও একই কথা। হাঁ, কিছু বিষয়ে ইজতিহাদের অবকাশও রাখা হয়েছে।

৪. বাইতুল মাল ও এ ধরনের অন্যান্য সংবেদনশীল পদে লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা ও চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই করা জরুরি। যোগ্য লোকেরাই শুধু এসব পদে আসীন হবে। কোনো অযোগ্য লোককে —সে যেই হোক না কেনো— রাষ্ট্রীয় পদগুলোতে কিছুতেই নিয়োগ দেয়া হবে না।

৫. বাইতুল মালের হক আদায়ের ব্যাপারে জনগণের সাথে কোমল ও নমনীয় আচরণ করা হবে। যারা বাস্তবিক পক্ষেই দুর্বল অসহায় বা অক্ষম, তাদের অবস্থা অবশ্যই বিবেচনা করা হবে। জিসর ইবনু জা‘ফর রহ. বলেন, আমি ‘আদি ইবনু আরতার উদ্দেশে প্রেরিত উমর ইবনুল খাত্তাব রা. এর পত্র পড়েছি। বসরায় তা আমাদেরকে পাঠ করে শোনানো হয়েছে। তা নিম্নরূপ— “হামদ ও সালাতের পর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইসলাম থেকে বিমুখতা প্রদর্শন করেছে এবং সীমালঙ্ঘন করে ও সুস্পষ্ট ক্ষতিগ্রস্ততায় নিপতিত হয়ে কুফরকে জীবনবিধানরূপে গ্রহণ করেছে— এমন লোকদের থেকে জিযয়া গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং জিযয়া আদায়ে অক্ষম— এমন ব্যক্তিদের জিযয়া মাফ করে দিবে। তাদেরকে নির্বিঘ্নে পৃথিবীতে বসবাস করতে দিবে। কেননা এতে নিহিত রয়েছে মুসলমানদের জীবন-জীবিকার কল্যাণ এবং শত্রুগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সঞ্চিত শক্তি ও বল। তোমাদের ওদিকে এমন যিম্মিদের খোঁজ নাও, যারা বুড়িয়ে গেছে, শক্তি-সামর্থ্য নিঃশেষ হয়ে পড়েছে এবং জীবিকা উপার্জনে অক্ষম হয়ে পড়েছে। অনন্তর মুসলমানদের বাইতুল মাল থেকে তাদের যথেষ্ট পরিমাণ ভাতার ব্যবস্থা করো। যদি কোনো মুসলমানের অধীনে এমন ক্রীতদাস থাকে, যে বুড়িয়ে গেছে, শক্তি-সামর্থ্য নিঃশেষ হয়ে পড়েছে এবং জীবিকা উপার্জনে অক্ষম হয়ে পড়েছে, তাহলে তার জন্য অপরিহার্য হলো সেই ক্রীতদাসের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা বা তাকে অন্য যেকোনো উপায়ে শক্তিসামর্থ্য যোগানোর চেষ্টা-কোশেশ করে; যাবত না মৃত্যু অথবা আযাদি তাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটায়। এর কারণ হলো, আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, আমিরুল মুমিনিন উমর রা. একবার এক যিম্মি বৃদ্ধ লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যে মানুষের দুয়ারে-দুয়ারে ভিক্ষা করে বেড়াতো। তাকে দেখে তিনি বললেন, যদি আমরা তোমার যৌবনে তোমার থেকে জিযয়া গ্রহণ করে থাকি আর তোমার বার্ধক্যে এভাবে তোমাকে অবহেলায় ফেলে রাখি, তবে আমরা তো তোমার সাথে ইনসাফ করিনি। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর উমর রা. মুসলমানদের বাইতুল মাল থেকে তার জন্য পর্যাপ্ত ভাতার ব্যবস্থা করেন।”[6]

উমর রা. যিম্মিদের ব্যাপারে তার কৃত ওসিয়তে বলেছিলেন, “তাদের সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করা হবে। তাদের ওপর সাধ্যাতীত দায় চাপানো হবে না। আর তাদের নিরাপত্তার জন্য লড়াই করা হবে।”[7]

৬. ধনীরা যেনো রাষ্ট্রের সাধারণ অর্থনৈতিক সম্পদ একচেটিয়া অধিকার করতে না পারে, সে বিষয়ের প্রতি পূর্ণ লক্ষ রাখা হবে। কেননা পুঁজিপতি ধনীদের তো এমনিই রয়েছে সম্পদের প্রাচুর্য, রয়েছে অর্থ উপার্জনের অসংখ্য ক্ষেত্র ও সম্ভাবনা। এখন যদি রাষ্ট্রের সাধারণ অর্থনৈতিক সম্পদ একচেটিয়া অধিকার করার পথও তাদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়, তাহলে রাষ্ট্র তো তাদেরই নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে আর অভাবীরা চিরবঞ্চিত থেকে যাবে। এজন্য উমর রা. ‘হিমা’র দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর এতো বেশি কঠোরতা আরোপ করেছেন, যাতে করে কিছুতেই তাতে ইবনু আফফান এবং ইবনু আওফের গবাদিপশু ঢুকতে না পারে। যায়দ ইবনু আসলাম নিজ পিতা থেকে বর্ণনা করেন, উমর রা. হুনাই নামক তার এক ক্রীতদাসকে ‘হিমা’র দায়িত্বে নিয়োগ করেন। তখন তিনি তাকে বলেন, “হে হুনাই, মুসলমানদের সাথে সর্বোচ্চ বিনয়ের আচরণ অবলম্বন করবে। মাজলুমের বদদোয়াকে ভয় করবে। কেননা মাজলুমের বদদোয়া কবুল হয়ে থাকে। দু-চারটা উট বা ছাগলের মালিকদেরকে ‘হিমা’য় প্রবেশ করাতে পারো। তবে ইবনু আওফ এবং ইবনু আফফানের গবাদিপশু আমার থেকে সুদূরে রেখো। কেননা যদি তাদের গবাদিপশু ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে তারা খেজুর এবং শস্যের দিকে ফিরে যাবে।”

৭. অর্থনৈতিক চালিকাশক্তিকে ক্রমবর্ধমানভাবে এগিয়ে নিতে হবে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতি সবিশেষ দৃষ্টি রাখা হবে। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বিনিয়োগের প্রতি ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করা হবে। যেমন এর একটি পন্থা হলো, অনুর্বর ভূমি আবাদ করা। হিশাম ইবনু উরওয়াহ নিজ পিতা সূত্রে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ g বলেছেন, “যে কোনো অনুর্বর ভূমি আবাদ করে, তা তার মালিকানাভুক্ত হয়ে যায়।”[8] আরেকটি পন্থা হলো, জমিন জায়গির দেয়া। রাসুলুল্লাহ g এবং তার পরবর্তীদের মধ্যে এর যথেষ্ট প্রচলন ছিলো। তবে আলিমগণ জায়গির প্রদানের জন্য একটি অপরিহার্য শর্ত আরোপ করেছেন। আর তা হলো, জায়গির প্রদান যেনো ব্যক্তিমালাকানাধীন কোনো জমির জন্য ক্ষতির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।[9]

 

(সমাপ্ত)

 

পড়ুন– ইসলামি অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বাইতুল মাল : পরিচিতি ও কার্যক্রম – ১

 

তথ্যসূত্র:

[1] আলমুসান্নাফ, ইমাম ইবনু আবি শায়বা: ৬/৪৬১

[2] সুরা হাশর: ৭

[3] সুনানে নাসায়ি: ৪৭৪৬; মুসনাদে আহমদ: ৯৫৯

[4] সুরা আনফাল: ১

[5] কিতাবুল আমওয়াল, ইবনু যানজুওয়াহ: ২/৫৬৩

[6] কিতাবুল আমওয়াল, ইবনু যানজুওয়াহ: ১/১৬৯

[7] কিতাবুল খারাজ, আবু ইউসুফ: ৩৭

[8] সুনানুত তিরমিযি: ১৩৭৮; সুনানু আবি দাউদ: ৩০৭৩; সুনানুন নাসায়ি: ৫৭২৯; আলমুয়াত্তা, ইমাম মালিক: ৮৩৩; সুনানুদ দারাকুতনি: ৪৫০৬

[9] কিতাবুল খারাজ, ইমাম আবু ইউসুফ: ৬২-৬৫

Share This