মানুষ অনুকরণপ্রিয় জীব। সে কাউকে অনুসরণ করতে ভালোবাসে, অনুকরণ করতে ভালোবাসে। সেই শৈশব থেকে কৈশোর, তারুণ্য থেকে যৌবন, জীবন থেকে মরণ—জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে কারও আদর্শ আঁকড়ে থাকতে মানুষ পছন্দ করে। আদর্শের জায়গাটি কখনো খালি থাকে না। হয়তো সে জায়গাটি ভালো কোনো আদর্শের দখলে থাকে, কিংবা ভালো’র অনুপস্থিতিতে তা দখল করে রাখে মন্দ আদর্শ।
মানুষ আদর্শ হিসেবে তার সামনে কাউকে পেতে চায়। সহজে কাউকে না পেলে কষ্ট করে নিজেই খুঁজে নেয়। কখনো-বা নিজের অজান্তেই সে কারও আদর্শে দীক্ষিত হতে থাকে। প্রথমে চোখে দেখা, এরপর বিমুগ্ধ হওয়া, তারপর ভালোবাসা এবং শেষাবধি তার আদর্শের ওপর নিজেকে সঁপে দেওয়া—এ সবই মানুষই দৈনন্দিন চিত্র এবং এক অনস্বীকার্য বাস্তবতা। এ জন্যই হাদিসে এসেছে : ‘মানুষ তার বন্ধুর আদর্শের ওপর থাকে। সুতরাং তোমাদের একেকজন যেন লক্ষ করে নেয়, সে কাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করছে।’
ইতিহাসে অনেক স্মরণীয় বরণীয় ব্যক্তিত্বের জীবনালেখ্য সংরক্ষিত রয়েছে। গ্রিক ইলিয়াড, ইরানি শাহনামা, ভারতীয় মহাভারত, রামায়ন, গীতা—হাজার হাজার বছর ধরে এসব সংরক্ষিত হয়ে আসছে। এসবের উপজীব্য কী? মানুষ যেন এসব চরিত্র থেকে নিজেদের আদর্শ খুঁজে নেয়, এ ছাড়া আর অন্য কিছু কি?
অতীতের ক্যানভাসে অসংখ্য মানুষের চিত্র উঠে আসে আমাদের সামনে। আমরা পাই রকমারি জীবনাদর্শের দেখা। করিথেজের হ্যানিবল, মেসিডোনিয়ার আলেকজেন্ডার, রোমের জুসিয়াস সিজার, ইরানের দারা, ইউরোপের রক্তখেকো নেপোলিয়ন—প্রত্যেকের জীবন স্বতন্ত্র সাজে সজ্জিত, স্বকীয় শোভায় শোভিত। সক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টটল, ডিওজিনাস’সহ হাজারো দার্শনিকের জীবনের রয়েছে আলাদা রঙ, আলাদা গন্ধ। নমরুদ, ফেরাউন, কারুন, আবু জাহল, আবু লাহাবের ইতিহাসও তো সংরক্ষিত রয়েছে আপন বিভায়। রয়েছে বড় বড় বিজেতাদের জীবনেতিহাস। রয়েছে কবি-সাহিত্যিকদের জীবনচরিত। কিন্তু তারা কেউই বিশ্বমানবতার সামনে জীবনের সবক্ষেত্রে অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় কোনো আদর্শ রেখে যায়নি, যেতে পারেনি। কবি-সাহিত্যিকদের জন্য তো খোদ প্লেটোর নীতিতেই কোনো স্থান রাখা হয়নি। হোমার থেকে সূচিত হয়ে অদ্যাবধি মুহূর্তকালের উদ্দীপনার ফানুশ ছড়ানো ছাড়া এরা মনুষ্য সম্প্রদায়কে জীবন ও জগতের সমস্যা সমধানের কোনো কার্যকরী পরামর্শ দিয়ে যেতে পারেনি।
মহান আল্লাহ যুগে যুগে অসংখ্য নবি-রাসুল পাঠিয়েছেন। প্রেরিতগণের মোট সংখ্যা যে কত, তা আল্লাহই ভালো জানেন। তবে এই সংখ্যাটা যে অনেক বড়, এ কথা তো সহজেই অনুমেয় এবং ইতিহাসের বিচারে নির্দ্বিধ স্বীকার্য। নবি-রাসুলগণ পৃথিবীতে আগমন করে নিজেদের জীবনাদর্শ উপস্থাপন করেছেন, আল্লাহ তাআলার নাজিলকৃত বিধানকে তত্ত্ব থেকে উঠিয়ে জীবনে তুলে ধরেছেন, মানুষকে হাতে-কলমে স্রষ্টার আনুগত্য শিখিয়েছেন, অবশেষে ইহজগত থেকে বিদায়ের সময় তাদের এক প্রোজ্জ্বল দীনের ওপর রেখে গেছেন।
যুগে যুগে নবি-রাসুলগণ মানুষের হৃদয়ের শাসন করেছেন। পৃথিবীতে প্রতিটি জাতি এবং প্রতিটি দেশে যতটুকু আলোক এবং প্রাণের দেখা পাওয়া যায়, তা সবই এ সকল পুণ্যাত্মার হৃদয়ধারা থেকে উৎসারিত, যার স্রোতধারা আজও বহমান। নবি-রাসুলগণ খেয়ালি কবি ছিলেন না; কিন্তু তাদের হৃদয়স্পর্শী বক্তব্যে এখনো মানুষের মনোজগত আলোড়িত। আইনপ্রণয়নকারী রাজসভার ময়ূরসিংহাসনে তাদের ঠাঁই হয়নি ঠিক, কিন্তু শত-সহস্র বছর পেরিয়ে যাবার পরও তাদের আনীত বিধানই টিকে আছে স্বমহিমায়। পৃথিবীর ঐতিহাসিক বাস্তবতাই এ কথার সাক্ষ্য দেয়।
পৃথিবী শাসন ভুলে যায়; কিন্তু আদর্শ আঁকড়ে রাখে। রাজ্যের শাসন একসময় নিঃশেষ হয়ে যায়; কিন্তু হৃদয়ের অদৃশ্য শাসন যুগ-যুগান্তেও টিকে থাকে আপন মহিমায়। মৌর্য্যধের নৃপতি অশোকের অনুশাসন এখন শুধু পাথরেই খোদাই করা রয়েছে; কিন্তু বুদ্ধের শিক্ষা উজ্জ্বল হয়ে আছে হৃদয়ের মণিকোঠায়। হস্তিনাপুর ও কোনৌজের রাজা-মহারাজার দেওয়া অনুশাসনগুলো মাটির সঙ্গে মিশে গেছে; অথচ মনুজির ধর্মশাস্ত্র এখনো মানিত হচ্ছে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে। ব্যাবিলনের প্রথম আইন-প্রণয়নকারী শাসক হামবুরাবির রচিত সাংবিধানিক ধারাগুলো অনেক আগেই চাপা পড়েছে মাটির নিচে; কিন্তু সায়্যিদুনা ইবরাহিম আ.-এর শিক্ষা এখনো অবলম্বিত হয়ে আছে পরম ভালোবাসায়। ফেরাউনের দম্ভোক্তি এবং নিজের ব্যাপারে প্রভুত্বের ঘোষণা কালের অতলে হারিয়ে গেছে; কিন্তু মুসা আ.-এর মুজিযা আজও স্বীকৃত হয়ে আছে। সোলেনের রচিত আইন কতকালই আর টিকে ছিল! কিন্তু তাওরাতের ঐশী বিধান আজও মানুষের মধ্যে ন্যায়ের নিক্তিরূপে বরিত হয়ে আছে। রোমান আইন তাদের আদালতে সায়্যিদুনা ইসা আ.-কে অপরাধী সাব্যস্ত করেছিল; সময়ের ব্যবধানে তাদের নামগন্ধ হারিয়ে গেলেও ইসা আ.-এর জীবনাদর্শ ও শিক্ষা আজও আপন মহিমায় ভাস্মর। মক্কার আবু জাহল, ইরানের কিসরা, রোমের কায়সার আজ কোথায়? কোথায়ই-বা তাদের রাজদণ্ড? অপরদিকে মুহাম্মাদে আরাবি ﷺ-এর আনীত জীবনবিধান আজও প্রতিষ্ঠিত ও সর্বজনস্বীকৃত। কিয়ামত পর্যন্তই তা প্রতিষ্ঠিত ও স্বীকৃত থাকবে।
আবহাওয়াবিদদের দ্বারা আবহাওয়ার অবস্থাদি জানা যায়। দার্শনিকরা বস্তুর বিশেষত্বই উন্মোচিত করতে পারেন। চিকিৎসাবিদরা পারেন রোগের ব্যবস্থাপত্র দিতে। বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা আবিষ্কার ও নির্মাণশিল্পেই কেবল অবদান রাখতে পারেন। কিন্তু মানুষের জীবন গড়ার শিক্ষা, অনুপম আদর্শের দীক্ষা তারা দিতে ব্যর্থ। কিন্তু মানুষের তো থেমে থাকার সুযোগ নেই। কারণ, আদর্শের জায়গাটি কখনোই খালি থাকে না। মানুষ হয়তো রহমানের ইবাদত করে তাকে সন্তুষ্ট করবে, কিংবা সে নফস ও শয়তানের উপাসনা করে প্রভুর অসন্তোষ কুড়িয়ে নেবে—এর বাইরে তো আর কিছু হওয়ার নয়। কোন কাজে রহমান সন্তুষ্ট হন, কীভাবে কী করলে তিনি বান্দাকে উভয় জগতে সফল করেন—এ বিষয়গুলো তো আমাদের ক্ষুদ্র বিবেকবুদ্ধি ঠাহর করতে ব্যর্থ। এ জন্য প্রয়োজন সরাসরি আসমানি নির্দেশনা। প্রয়োজন তত্ত্ব ও প্রয়োগের সম্মিলন। আল্লাহ এ কাজটিই করিয়েছেন তার অবতীর্ণ কিতাব এবং প্রেরিত মানবগণের দ্বারা; যাতে মানুষেরা আর কখনো বিভ্রান্তির চোরাবালিতে আটকে না যায়, যাতে করে যে ধ্বংস হওয়ার, সে যেন যথাযথ প্রমাণ সামনে আসার পরই ধ্বংস হয়, কিয়ামাতের দিন সে যেন স্রষ্টার প্রতি কোনোভাবে দোষারোপ করতে না পারে। সত্য থাকবে দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট, মিথ্যাও থাকবে উজ্জ্বল, প্রোজ্জ্বল। এরপর যে যেটাকে বেছে নিতে চাবে, তার জন্য সেটাকে বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকবে। পরীক্ষার কেন্দ্র এ পৃথিবীতে কাউকে সঠিক উত্তর লিখতে বাধ্য করা হবে না। এখানে সবাই স্বাধীন। তাই সত্যকে জানার পর, সত্যকে বোঝার পরও কেউ যদি বিভ্রান্ত হতে চায়, নিজের পায়ে কুড়াল মারতে চায়, তবে সে তা করুক, সে নিজ হাতে নিজের জাহান্নাম কামিয়ে নিক—স্রষ্টা এতে কোনো বাধ সাধবেন না।
সত্যের ভেতর কোনো অস্পষ্টতা নেই, কোনো ধোঁয়াশা নেই, নেই কোনো আচ্ছন্নতা। নুহের দাওয়াতি তৎপরতা, ইবরাহিমের একত্ববাদের আহ্বান, ইসহাকের উত্তরাধিকার, ইসমাইলের আত্মনিবেদন, মুসার কঠোর পরিশ্রম, হারুনের সত্যাবলম্বন, ইয়াকুবের আত্মসমর্পণ, সত্যের দৈন্যে দাউদের যাতনা, শাসনক্ষমতায় সুলাইমানের অধিষ্ঠান, জাকারিয়ার ইবাদত-বন্দেগি, ইয়াহইয়ার সচ্চরিত্রতা, ইসার দুনিয়াবিমুখতা, ইউনুসের ভুলস্বীকার, লুতের জীবন বাজি রাখা, আইয়ুবের কষ্টসহিষ্ণুতা—এ সবই তো মহত্তম জীবনের রূপরেখা। এ সবই ইসলামের মূল স্পিরিট ও শিক্ষা। যুগে যুগে যা অপরিবর্তনীয়। কালের আবর্তন-বিবর্তনেও যা রূপ বদলায় না। মানুষের নৈতিকতা ও মনোজগতের ভিত্তি দাঁড়িয়ে আছে এগুলোকে কেন্দ্র করেই। পৃথিবীতে আজও যেখানে এসব শিক্ষার চর্চা দেখা যায়, তা সবই আল্লাহ তাআলার প্রেরিত নবি-রাসুলগণেরই উত্তরাধিকার, তাদের অসামান্য অবদান।
পৃথিবীতে কত নবিই তো আগমন করেছিলেন; কিন্তু যিনি একই সঙ্গে সমানভাবে সাক্ষ্যদানকারী, সুসংবাদদাতা, সতর্ককারী, সত্যের আহ্বানকারী, আলো বিকিরণকারী প্রদীপ ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষায়িত ছিলেন, তিনি তো আমাদের নবি মুহাম্মাদে আরাবি সা.। এর পূর্বে যে সকল নবি ছিলেন, আমাদের নবির আগমনের পর তাদের সবার ধর্ম রহিত হয়ে গেছে। এমনকি তিনি বলেছেন, ‘যদি মুসা জীবিত থাকতেন, তার জন্যও আমার অনুসরণ করা ছাড়া অন্য কোনো গত্যন্তর ছিল না।’ এ ছাড়াও পূর্ববর্তী নবিগণের বিস্তারিত জীবনী ঐতিহাসিকভাবে সংরক্ষিত হয়নি। তাদের ধর্মীয় গ্রন্থগুলো পর্যন্ত বিকৃতির হাত থেকে রক্ষা পায়নি। বিকৃত ধর্মগ্রন্থের ওপর নির্ভর করে তাদের ইতিহাস জানা দুষ্কর। এসব গ্রন্থে তো তাদের চরিত্রের ওপরও বিভিন্নভাবে কালিমা লেপন করা হয়েছে। কোনো কোনো নবিকে কামুক, চরিত্রহীন হিসেবে প্রদর্শন করা হয়েছে। তাদের পূর্ণাঙ্গ আদর্শ আমাদের মধ্যে নেই। যতটুকু বইপত্রে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলোরও ঐতিহাসিক সত্যতা প্রশ্নবিদ্ধ।
অপরদিকে কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত, সকল নবির দীন ছিল ইসলাম। ইসলামের মূলভিত্তি, অর্থাৎ বিশ্বাস এবং উত্তম চারিত্রিক গুণাবলি সর্বযুগেই অপরিবর্তিত ছিল। শুধু শরিয়ত তথা আমলের বিধানে পরিবর্তন এসেছে। নামাজ, রোজা ইত্যাদির মাসআলাগুলোতে পার্থক্য হয়েছে। আর এ সবই শরিয়তের শাখাগত পর্যায়। এ জন্যই তো আমাদের নবি সা.-কেও মিল্লাতে ইবরাহিম তথা ইবরাহিম আ.-এর আদর্শ অনুসরণ করতে আদেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর উম্মতকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মিল্লাতে ইবরাহিম আ. আঁকড়ে থাকার। তবে শরিয়তে ইবরাহিম অনুসরণ করার আদেশ কাউকে দেওয়া হয়নি, এমনকি তার অনুমতিও রাখা হয়নি। তাই মুহাম্মাদ সা.-এর আদর্শ অনুসরণ করার অর্থই হলো পূর্বের সকল নবিগণের আদর্শ অনুসরণ করা। কারণ, আদর্শের ক্ষেত্রে তারা সকলে ছিলেন অভিন্ন। পূর্ববর্তী নবিগণের মধ্যে আদর্শিক ত্যাগের ক্ষেত্রে ইবরাহিম আ.-এর নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এ কারণে কুরআনে বারবার তার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তবে যেহেতু সকল নবির আদর্শ অভিন্ন, তাই যে-কারও আদর্শ অনুসরণ করাই অন্য সকলকে মান্য করা এবং তাদের আদর্শ অনুসরণ করার নামান্তর।
রাসুলুল্লাহ সা. যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় যান, তখন তিনি সেখানকার ইহুদিদের আশুরার দিন রোজা রাখতে দেখেন। তিনি তাদের এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা বলে, এ দিন আল্লাহ তাআলা ফিরাউন ও তার সম্প্রদায়কে ডুবিয়ে মেরেছিলেন এবং মুসা আ. ও তার সম্প্রদায়কে বিপদ থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। এ জন্য এ দিনে মুসা আ. কৃতজ্ঞতাস্বরূপ রোজা রাখতেন। তাই আমরাও তার অনুসরণে রোজা রাখি। তাদের এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, ‘তোমাদের চাইতে মুসার অনুসরণ করার অধিক উপযুক্ত তো আমি।’ এরপর থেকে নবি সা.-ও নিয়মিত এ দিনটিতে রোজা রাখতেন এবং সাহাবিদেরও আবশ্যিকভাবে এ দিনে রোজা রাখাতেন। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগ পর্যন্ত এ দিনের রোজা আবশ্যকীয় ছিল।
এ ঘটনা থেকে স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয় যে, যেকোনো নবি অন্যান্য নবিগণের আদর্শ অনুসরণ করে থাকেন। এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সা. নবুওয়াত প্রাপ্তির আগেই হেরা গুহায় গিয়ে ইবাদত করতেন। তখন তো ইবাদত করার রীতিনীতিই তাঁর প্রতি অবতীর্ণ হয়নি। তাহলে কীভাবে তিনি ইবাদত করতেন? নবি ইবরাহিম আ.-এর ইবাদতের যে ব্যাপারগুলো তখনো মানুষের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত ও স্বীকৃত ছিল, তিনি সেগুলোর আলোকেই ইবাদত করতেন। রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘নবিগণ বৈমাত্রেয় ভাই। তাদের মা ভিন্ন, কিন্তু তাদের সকলের দীন এক।’
আজও যদি মানবতা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে উদ্ধার পেতে চায়, আজও যদি কোনো মানুষ উভয় জগতে সফলতা লাভ করতে চায়, তার জন্য একটাই পথ খোলা রয়েছে—নবিগণের আদর্শ অবলম্বন করা। আর এর একমাত্র সম্ভাবিত পথ হচ্ছে, মুহাম্মাদে আরাবি সা.-এর নিঃশর্ত অনুসরণ করা। এতদ্ভিন্ন যে পথেই তারা চলুক না কেন, কখনো কোনোভাবেই তারা সফলতার দেখা পাবে না। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে না।