প্রতিনিয়ত ডুবে আছি আমরা গুনাহের অথৈ সাগরে। নিজের ওপরে করেছি শত অবিচার। হৃদয়াকাশ হয়ে গেছে ঘন কালো। তবুও মহামহিম আল্লাহ ধ্বসিয়ে দেননি আমাদেরকে ভূমিতলে। কিংবা করেননি আকাশ থেকে পাথরবর্ষণ। উল্টো সাহস যুগিয়েছেন। নিরাশ হতে বারণ করেছেন। নির্দেশ দিয়েছেন গুনাহ পরিত্যাগের, হেদায়াতের দীপ্ত পথ অবলম্বনের। বলেছেন, “হে আমার বান্দারা, যারা অবিচার করেছো নিজের ওপরে, নিরাশ হয়ো না তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মার্জনা করবেন পাপরাশি। তিনি তো অতি ক্ষমাশীল, বড় দয়ালু।” [সুরা যুমার : ৫৩ ; সুরা নিসা : ৪৩, ৯৯, ১৩৯ ; সুরা হজ : ৬০ ; সুরা মুজাদালাহ : ২]
মহানবি সা. বলেন, কষ্টের কথা শুনে আল্লাহ থেকে অধিক ধৈর্যধারণকারী কেউ নেই। তারা আল্লাহর জন্য সন্তান স্থির করে। এতোদসত্ত্বেও তিনি তাদেরকে প্রশান্তিতে রাখেন, রিযিক প্রদান করেন। [বোখারি:৭৩৭৮ ; মুসলিম : ২৮০৪]
ক্ষমাশীল মহামহিম আল্লাহ তার প্রিয় নবিকেও নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষমাপরায়ণতা অবলম্বনের। ইরশাদ হয়েছে, “ক্ষমা অবলম্বন করুন আর সদয়তার নির্দেশ দিন, আর ভ্রুক্ষেপ করবেন না অজ্ঞদের দিকে।” [সুরা আ’রাফ : ১৯৯; সুরা মায়িদা : ১৩]
নির্দেশ দিয়েছেন তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারীদেরকেও, তারা যেনো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে অন্যের ভুল-ত্রুটি ও অবিচার। [সুরা জাসিয়া : ১৪ ; সুরা নুর : ২২]
ক্ষমাপরায়ণতা অবলম্বনের ব্যাপারে উৎসাহ যুগিয়েছেন আরো অনেক আয়াতে। ক্ষমাকে অভিহিত করেছেন জান্নাতবাসীদের গুণ বলে। আরো বলেছেন, পুরস্কৃত করবেন তিনি ক্ষমাশীলদেরকে বিশেষ পুরস্কারে। [সুরা আলে ইমরান : ১৩০-১৩৬ ; সুরা তাগাবুন : ১৪-১৫ ; সুরা শুরা : ৩৭-৪৩]
পূর্ববর্তী নবিগণের ক্ষমাগুণ
১. নুহ আ. প্রেরিত হলেন আপন সম্প্রদায়ের কাছে নবুওয়াতের বার্তা নিয়ে। তাদেরকে দাওয়াত দিলেন সত্যধর্মের ও একত্ববাদের। তুলে ধরলেন তাদের সামনে মূর্তিপূজার অসাড়তা। সম্প্রদায়ের নেতৃবর্গ তখন বলে ওঠলো, আমরা তো তোমাকে প্রকাশ্য গোমরাহিতে দেখতে পাচ্ছি। নুহ আ. উত্তেজিত হলেন না। মায়াভরা কণ্ঠে বললেন, “আমার কোনো গোমরাহি নেই। আমি তো রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসূল।” [সুরা আরাফ : ৬০-৬১]
২. হুদ আ. সরলমনে বড় আশা নিয়ে দাওয়াত দিলেন আপন সম্প্রদায়কে। হতভাগারা তখন বেঁকে বসলো। আপন মুখের ফুৎকারে সত্যের দীপ্ত প্রদীপ নিভিয়ে দিতে উদ্যত হলো। তারা বললো, আমরা তো নিশ্চিতভাবে দেখছি, তুমি নির্বুদ্ধিতায় লিপ্ত রয়েছো। হুদ আ. বললেন, “আমার কোনো নির্বুদ্ধিতা দেখা দেয়নি। আমি তো জগতসমূহের পালনকর্তার পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসূল।” [সুরা আ’রাফ : ৬৬-৬৭]
মুহাম্মাদে আরাবি সা. এর ক্ষমাগুণ
১. তাওরাতে বর্ণিত মহানবির গুণাবলির বর্ণনার ধারাবাহিকতায় আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আ’ছ রা. নলেন, “তিনি কঠিন ও রূঢ় স্বভাবের অধিকারী নন। আর নন তিনি হাট-বাজারে হট্টগোলকারী। তিনি মন্দকে প্রতিহত করেন না মন্দ দ্বারা। তার স্বভাববৈশিষ্ট্য ক্ষমা করা, মার্জনা করা।” [বোখারি : ২১২৫]
২. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, যেনো আমার চোখে এখনও ভাসছে প্রিয়নবির মুখাবয়ব। তিনি বর্ণনা করছেন কোনো এক নবির কথা। (কুরতুবি রহ. বলেন, তিনি মূলত নিজের ঘটনাই বর্ণনা করছেন নিজেকে গোপন রেখে। [ফাতহুল বারি : ১২/৩২৪] আপন সম্প্রদায়ের লোকেরা তাকে মেরে রক্তাক্ত করে ছেড়েছে। আর সেই নবির চেহারা থেকে রক্ত মুছছেন আর বলছেন, “প্রভু হে, ক্ষমা করে দাও আমার সম্প্রদায়ের অবুঝ লোকগুলিকে!” – [বোখারি : ৬৯২৯ ; মুসলিম : ১০৫৭]
৩. আনাস বিন মালিক রা. বলেন, একদিন রাসূলের সাথে আমি হাঁটছিলাম। রাসূলের গায়ে ছিলো একটি নাজরানি চাদর। বসনাঞ্চল ছিলো বেশ পুরু। ইত্যবসরে এক গেঁয়ো লোক রাসূলকে দেখে তার চাদর ধরে জোরসে টান দিলো। আমি রাসূলের ঘাড়ের ওপরে দৃষ্টি ফেললাম। টানের আঘাতে তাতে দাগ পড়ে গেছে! এরপর সেই গেঁয়োলোক রাসূলকে উদ্দেশ্য করে বললো, তোমার কাছে রক্ষিত আল্লাহর সম্পদের কিয়দাংশ আমাকে প্রদানের নির্দেশ দাও। রাসূল সা. তখন তার দিকে ফিরে মৃদু হাসলেন। এরপর তাকে তা প্রদানের নির্দেশ দিলেন। [বোখারি : ৬০৮৮]
৪. জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. বর্ণনা করেন, নজদ অভিমুখে এক জিহাদে আমি রাসূলের সাথে ছিলাম। জিহাদ শেষে ফেরার পথে ভরদুপুরে সারি সারি বাবলা গাছ বিশিষ্ট এক উপত্যকায় আমরা অবতরণ করলাম। বিক্ষিপ্ত হয়ে সবাই তখন গাছের ছায়ায় বিশ্রাম করছিলাম। রাসূলও তখন এক বাবলা গাছের সাথে তরবারি ঝুলিয়ে বিশ্রাম করছিলেন। সাহাবিগণের চোখে তখন তন্দ্রা এসেছিল। আচমকা এক বেদুইন এসে রাসূলের ঝুলানো তরবারি নিয়ে তা খাপমুক্ত করলো। পরক্ষণে সে রাসূলের ওপরই তা ধারণ করলো। রাসূলের ঘুম তখন ভেঙ্গে গেলো। তাকে জাগ্রত হতে দেখে বেদুইন বলে ওঠলো, কে রক্ষা করবে তোমাকে আমার হাত থেকে? রাসূল তখন তিনবার বললেন, আল্লাহ! বেদুইনের দেহ তখন প্রকম্পিত হলো। হাত থেকে পড়ে গেলো তরবারি। অনন্তর রাসূল তাকে কোনোই শাস্তি দিলেন না কিংবা বললেন না কোনো কটু কথা। এরপর রাসূল সবাইকে ডাকলেন। সাহাবিগণের উপস্থিতিতে বিস্তারিত ঘটনা শুনালেন। সেই বেদুইন তখন তার পাশে নীরব বসা। [বোখারি : ২৯১০, ৩৯৯০ ; মুসলিম : ৮৪৩]
৫. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, এক গেঁয়ো এসে মসজিদে ঢুকলো। রাসূল সা. তখন বসা। সে এসে নামাযে দাঁড়ালো। নামায শেষে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করতে লাগলো, “হে আল্লাহ, আপনি রহম করুন আমাকে ও মুহাম্মাদকে! আমাদের সাথে রহম করবেন না আর কাউকে!” রাসূল সা. তার দিকে তাকালেন। বললেন, “তুমি দেখছি এক ব্যাপক বিষয়কে সংকীর্ণ করে ফেলেছো!” কিছুক্ষণ অতিক্রান্ত না হতেই সেই গেঁয়ো মসজিদে পেশাব করতে বসে গেলো। সাহাবিরা তখন দ্রুতবেগে তার কাছে ছুটে গেলো। রাসূল তাদেরকে বাধা প্রদানে বারণ করলেন। পেশাব শেষ হলে সাহাবিদেরকে এক বালতি পানি ঢেলে দিতে নির্দেশ দিলেন। এরপর বললেন, তোমাদেরকে প্রেরণ করা হয়েছে সহজকারীরূপে; কঠিনকারীরূপে নয়। [তিরমিযী : ১৪৮ ; আবু দাউদ : ৩৮০]
৬. কুরাইশ কাফিরগোষ্ঠী কী নির্মম অত্যাচার করেছিলো নিরপরাধ মুসলমানদের ওপরে! বইয়ে ছিলো রক্তের কতো বন্যা! মহানবিকেও করেছিলো নিপীড়িত, নিগৃহীত।
অষ্টম হিজরিতে মক্কা বিজয়ের পরে রাসূল সা. সেই মক্কায় প্রবেশ করলেন অবনত মস্তকে, সাশ্রু নয়নে। উচ্চারিত হচ্ছিলো তার পবিত্র যবানে,
إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُبِينًا
[সুরা ফাতহ : ১]
এরপর ঘোষণা করলেন সাধারণ ক্ষমা- “যে অস্ত্র সমর্পণ করবে সে নিরাপদ। যে বন্ধ রাখবে নিজ ঘরের দরজা সে নিরাপদ। যে প্রবেশ করবে হারামে সে নিরাপদ। যে প্রবেশ করবে আবু সুফিয়ানের ঘরে সেও নিরাপদ। অবশেষে সবার উপস্থিতিতে করুণার আধার রাসূল সা. ঘোষণা দিলেন, আজ তোমাদের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই! তোমরা সবাই মুক্ত। [আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া : ৪/২৯১-৩০৮]
৭. আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. নিজ হাতে আঘাত করেননি কাউকে; না স্ত্রী কিংবা দাস-দাসীকে। তবে আল্লাহর রাহে জিহাদের বিষয়টি ভিন্ন। আর কখনো এমন হয়নি, তার সাথে কোনো অন্যায় আচরণ হয়েছে আর তিনি অন্যায়কারী থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেছেন। তবে কেউ আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়াবলিতে লিপ্ত হলে আল্লাহর জন্য তিনি তার শোধ নিতেন। [মুসলিম : ২৩২৮]
সাহাবিদের ক্ষমাগুণ
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, উহুদ যুদ্ধ চলাকালে ইবলিস হঠাৎ সৈন্যদলের মাঝে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে ওঠলো- ঐ যে পেছনে! সামনের দল তখন পেছনের দলের ওপরে চড়াও হলো। একপর্যায়ে তারা হুযায়ফা রা. -এর বাবা ইয়ামান রা.-কে লড়াইয়ের প্রভ-তায় আঘাত করে বসলো। হুযায়ফা রা. চিৎকার করে ওঠলেন- আমার বাবা! আমার বাবা!! কিন্তু ততক্ষণে ইয়ামান রা. শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করেছেন। অবস্থাদৃষ্টে হুযায়ফা রা. বললেন, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন! তিনি কোনো শোধ নিলেন না হত্যাকারীদের থেকে। [বোখারি:৬৮৮৩]
সালাফের ক্ষমাগুণ
শাইখুল ইসলাম মুফতি তাকি উসমানি দা.বা. আপন পিতা মুফতিয়ে আযম পাকিস্তান আল্লামা শফি রহ. সূত্রে বর্ণনা করেন, প্রখ্যাত বুযুর্গ মাওলানা ইসমাইল শহিদ রহ. অতীতে যার দৃষ্টান্ত মেলা ভার- একবার দিল্লির জামে মসজিদে বয়ান করছিলেন। মজলিস ছিলো ভক্ত-অনুরক্তদের উপস্থিতিতে টইটুম্বুর। ইত্যবসরে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলে ওঠলো, শুনলাম, আপনি নাকি হারামযাদা! মাওলানা ইসমাইল শহিদ রহ. বিনয়ভরা কণ্ঠে বললেন, ভাই, তুমি ভুল শুনেছো! আমার মায়ের বিয়ের স্বাক্ষী তো এখনও দিল্লিতে জীবিত রয়েছে। [মেরে ওয়ালেদ মেরে শায়খ : ১১০]
ক্ষমাপরায়ণতা সম্পর্কিত হাদিসসমূহ
১. আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আছ রা. থেকে বর্ণিত, নবি সা. মেহরাবে উপবিষ্ট অবস্থায় বললেন, তোমরা দয়া করো। পরিণামে দয়াপ্রাপ্ত হবে। অন্যকে ক্ষমা করো। ফলস্বরূপ নিজেরা ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে। [মুসনাদে আহমদ : ৬৫৪১]
২. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, সদকা সম্পদে সামান্য পরিমাণও হ্রাস করে না। ক্ষমা শুধু ব্যক্তির মর্যাদাই বৃদ্ধি করে। আল্লাহর জন্য কেউ বিনয় অবলম্বন করলে পরিণামে আল্লাহ তার মর্যাদা সুউচ্চ করেন। [মুসলিম : ২৫২৮ ; তিরমিযী : ২০২৯]
৩. মুআয বিন আনাস রা. থেকে বর্ণিত, নবি সা. বলেছেন, প্রতিশোধ গ্রহণে সক্ষম অবস্থায় যে ক্রোধ সংবরণ করে কেয়ামত দিবসে সকল সৃষ্টির উপস্থিতিতে আল্লাহ তাকে আহ্বান করে জান্নাতের হুর নির্বাচনের বিশেষ অধিকার প্রদান করবেন। [তিরমিযী : ২৩৯৩ ; আবু দাউদ : ৪৭৭৭]
৪. উকবা বিন আমির রাযি. রাসূলের কাছে আবেদন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমাকে শ্রেষ্ঠতম আমলের কথা বলে দিন। রাসূল সা. বললেন, হে উকবা, যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে তুমি তার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখো। যে তোমাকে বঞ্চিত করে তুমি তাকে প্রদান করো। যে তোমার প্রতি অবিচার করে তুমি তাকে ক্ষমা করো। [মুসনাদে আহমাদ : ১৭৩৩৪, ১৭৪৫২; আবু দাউদ : ৪৮৯৬ ; মুসলিম : ২৫৮৮]
ক্ষমাপরায়ণতা সম্পর্কিত আছার
১. আবু বকর রা. বলেন, আমার কাছে এ মর্মে বর্ণনা পৌঁছেছে যে, মহামহিম আল্লাহ কেয়ামত দিবসে একজন আহ্বানকারীকে নির্দেশ দিবেন। অনন্তর সে আহ্বান করবে, আল্লাহর কাছে যার কিছু পাওনা রয়েছে সে যেনো উপস্থিত হয়। ক্ষমাশীল বান্দারা তখন মহামহিমের দরবারে উপস্থিত হবে। আল্লাহ তখন তাদেরকে ক্ষমাগুণের পুরস্কারস্বরূপ যথেষ্ট প্রতিদান দিবেন। [ইহইয়াউ উলুমিদ্দিন : ৩/১৯৫]
২. হাসান বসরি রহ. বলেন, মুমিনের সর্বোত্তম চরিত্রগুণ হলো ক্ষমাপরায়ণতা। [আলআদাবুশ কারণয়্যাহ : ১/৭১]
৩. এক ব্যক্তি উমর ইবনে আবদুল আযিয রহ.-এর কাছে উপস্থিত হয়ে নিজ অত্যাচারিত হওয়ার অভিযোগ করলো। উমর রহ. বললেন, অত্যাচারিত অবস্থায় আল্লাহর দরবারে তোমার উপস্থিত হওয়া শোধ নিয়ে উপস্থিত হওয়া থেকে বহুগুণে কল্যাণকর। [ইহইয়াউ উলুমিদ্দিন : ৩/১৮৩]
৪. এক বুযুর্গ বলেন, সহনশীল সে নয়, যে অত্যাচারিত হলে সহনশীলতা প্রদর্শন করে। পরবর্তীতে সুযোগ পেলে শোধ নিয়ে নেয়। প্রকৃত সহনশীল সে, যে অত্যাচারিত হলে ধৈর্য ধরে। প্রতিশোধের ক্ষমতা পেলে ক্ষমা করে। [ইহইয়াউ উলুমিদ্দিন : ৩/১৯৬; ফাতহুল বারি : ১৪/৩১৯ ; ইহইয়াউ উলুমিদ্দিন : ৩/১৮৩; দালিলুল ফালিহিন : ৩/৯১]
ক্ষমাপরায়ণতার উপকারিতা
১. ক্ষমাপরায়ণতা উত্তম চরিত্রের দীপ্ত বহিঃপ্রকাশ।
২. ক্ষমাপরায়ণতা ঈমানের পূর্ণতার পরিচায়ক।
৩. ক্ষমাপরায়ণতা মহানুভবতা ও উদারতার ইঙ্গিতবাহক।
৪. ক্ষমাপরায়ণতা আল্লাহর নৈকট্য ও মানুষের ভালোবাসা লাভের উপায়।
৫. ক্ষমাপরায়ণতা সমাজকে সুন্দর করে। উপহার দেয় সম্প্রীতির বন্ধনে অটুট আলোকিত এক জাতি।
৬.ক্ষমাপরয়ণতা এক আলোকবর্তিকা, যা অমুসলিমদেরকেও ইসলাম গ্রহণে উৎসাহিত করে।
পুনশ্চ
ক্ষমাপরায়ণতার গুণ অর্জনের জন্য প্রয়োজন দৃঢ় সংকল্প। মিটিয়ে দিতে হবে নিজের আমিত্ত্বে। আল্লাহ বলেন, প্রকৃতপক্ষে যে সবর অবলম্বন করে ও ক্ষমা প্রদর্শন করে, নিঃসন্দেহে তা বড় হিম্মতের কাজ। [সুরা শুরা : ৪৩]
স্মতর্ব্য যে, ক্ষমাপরায়ণতার পুরস্কার শুধু পারলৌকিকই নয়। অর্জন করুন এ নববী গুণ আর উপভোগ করুন জীবন। আল্লাহ বলেন, তুমি মন্দকে প্রতিহত করো এমন পন্থায়, যা হবে উৎকৃষ্ট। ফলস্বরূপ তোমার এবং যার মধ্যে ছিলো শত্রুতা সহসাই দেখবে সে হয়ে যাবে সুহৃদ। আর এ গুণ কেবল তাদেরকেই দান করা হয়, যারা সহিষ্ণু এবং যারা মহা ভাগ্যবান। [হা-মিম-সাজদা : ৩৪-৩৫]