কল্যাণের আধার হয়েছেন সেই সত্তা, যিনি আকাশে সৃষ্টি করেছেন তারকারাজি এবং তাতে স্থাপন করেছেন দীপ্তিময় সূর্য (অথবা— উজ্জ্বল প্রদীপ) ও আলো বিস্তারকারী চাঁদ। এবং তিনিই সেই সত্তা, যিনি রাত ও দিনকে পরস্পরের অনুগামী করে সৃষ্টি করেছেন— (কিন্তু এসব বিষয় উপকারে আসে কেবল) সেই ব্যক্তির, যে উপদেশ গ্রহণের ইচ্ছা রাখে অথবা কৃতজ্ঞতা আদায় করতে চায়।
রহমানের বান্দা তারা, যারা জমিনে নম্রভাবে বিচরণ করে আর মূর্খরা তাদেরকে সম্বোধন করলে তারা শান্তিপূর্ণ কথা বলে; যারা রাত অতিবাহিত করে নিজ প্রতিপালকের সামনে সিজদারত এবং দণ্ডায়মান অবস্থায়; যারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তিকে হটিয়ে দিন। জাহান্নামের শাস্তি তো নিশ্চিত বিনাশ। নিশ্চয়ই তা নিকৃষ্টতম আবাস ও আশ্রয়স্থল; এবং যারা ব্যয় করার সময় অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্য করে না, বরং মধ্যপন্থা অবলম্বন করে; যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো উপাস্যের উপাসনা করে না এবং আল্লাহর নিষিদ্ধকৃত প্রাণকে ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া হত্যা করে না এবং ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না; যারা এরূপ করবে তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে। কেয়ামতের দিন তাদের আযাব দ্বিগুণ করে দেয়া হবে। সেখানে তারা লাঞ্ছিত অবস্থায় অনন্তকাল অবস্থান করবে। তবে যারা তাওবা করবে, ইমান আনয়ন করবে এবং সৎকর্ম করবে, আল্লাহ তাদের পাপরাশিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। যে তাওবা করে এবং সৎকর্ম করে, সে তো পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর দিকে ফিরে আসে; যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না (অথবা— যারা অন্যায় কাজে লিপ্ত হয় না) এবং যখন তারা অসার ক্রিয়াকলাপের সম্মুখীন হয়, তখন আত্মমর্যাদা রক্ষা করে তা এড়িয়ে চলে; যাদেরকে নিজ প্রতিপালকের আয়াত দ্বারা উপদেশ দেয়া হলে তারা তার ওপর অন্ধ ও বধিরের মতো হুমড়ি খেয়ে পড়ে না; যারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে আমাদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির পক্ষ থেকে দান করুন চোখের শীতলতা এবং আমাদেরকে খোদাভীরুদের জন্য আদর্শ বানান।
এরাই তারা, যাদেরকে তাদের সবরের প্রতিদানে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদ দেয়া হবে এবং সেখানে শুভেচ্ছা ও সালামের সাথে তাদের অভ্যর্থনা করা হবে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। আবাস ও আশ্রয়স্থল হিসেবে তা অতি উত্তম। আপনি বলে দিন, আমার প্রতিপালক তোমাদের পরোয়া করেন না, যদি তোমরা তাকে না ডাকো। তোমরা তো অস্বীকার করেছো। ফলে অচিরেই নেমে আসবে (অথবা— শীঘ্রই তা হবে) অপরিহার্য (অথবা— অনিবার্য) শাস্তি।