১. 

একজন তালিবুল ইলম ইমাম আবু ইয়ালা হাম্বলির কাছে এসে হাম্বলি মাযহাব শেখার আগ্রহ প্রকাশ করলো। ইমাম আবু ইয়ালা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার বাড়ি কোথায়?’ সে তার ঠিকানা জানালো। এরপর ইমাম যা বললেন, তা স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মতো।

‘তোমার শহরের অধিবাসীরা সকলে শাফেয়ি মাযহাব অধ্যয়ন করে। তুমি তা থেকে সরে গিয়ে আমাদের মাযহাবের দিকে কেন ঝুঁকলে?’

সে বললো, ‘আমি আমার মাযহাব থেকে সরেছি শুধুই আপনার প্রতি আগ্রহী হয়ে।’

তখন কাজি আবু ইয়ালা বললেন, ‘এটা ঠিক হবে না। কারণ যখন তুমি তোমার শহরে ইমাম আহমাদের মাযহাবের ওপর থাকবে আর দেশের বাকি অধিবাসীরা শাফেয়ি মাযহাবের ওপর থাকবে, তখন তুমি এমন কাউকে পাবে না, যে তোমার সাথে পাঠ পুনরাবৃত্তি করবে কিংবা তোমরা একজন আরেকজনকে পড়ে শোনাবে। আর তুমি এরই উপযুক্ত হবে যে, তুমি বিরোধ উসকে দেবে এবং বিবাদের সূত্রপাত করবে। বরং তোমার শাফেয়ি মাযহাবের ওপর থাকা, যেহেতু তোমার শহরের অধিবাসীরা তার ওপর রয়েছে, অধিক উপযুক্ত।’

এরপর তিনি তাকে শাইখ আবু ইসহাকের সান্নিধ্যে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন এবং তার পরামর্শ মোতাবেক সে চলেও গেলো। {আল-মুসাওয়াদা ফি-উসুলিল ফিকহ: ৫৪১}

 

২. 

খলিফা আবু জাফর মানসুর ইমাম মালিকের সামনে মুয়াত্তা পেশ করে এ দাবি জানালেন যে, তিনি সারাদেশে এটাকে ব্যাপক করে দিতে চান এবং বিচারক ও মুফতিদের এর আলোকে বিচার করা এবং ফতোয়া প্রদানে বাধ্য করতে চান। তার সেই দাবির জবাবে ইমাম মালিক বলেন,

‘হে আমিরুল মুমিনিন, আপনি এমনটা করবেন না। কারণ, মানুষের কাছে পূর্বেই অনেক ধরনের বক্তব্য পৌঁছে গেছে, তারা অনেক হাদিস শুনেছে, প্রত্যেক সম্প্রদায় তা-ই গ্রহণ করেছে, যা তাদের কাছে পূর্বে পৌঁছেছে এবং তারা এর আলোকেই আমল করেছে আর তারা এগুলো দীন হিসেবে গ্রহণ করেছে (বা এর সামনে নতি স্বীকার করেছে) রাসুলুল্লাহ সা.-এর সাহাবিগণের ইখতিলাফ থেকেই। তারা যে আকিদার ওপর রয়েছে, তাদের তা থেকে সরানোর পরিণাম ভয়াবহ (বা তাদের তা থেকে সরানো দুরূহ)। সুতরাং মানুষকে তা-সহই ছেড়ে দিন, যার ওপর তারা রয়েছে এবং প্রত্যেক দেশের অধিবাসীরা তাদের নিজেদের জন্য যা গ্রহণ করেছে।’ {তারিখুত তাবারি: ১১/৬৬০; আল-ইনতিকা: ৪১}

Share This