প্রসঙ্গ: রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান ও মুহাজির রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী

 

ইমানের দাবি হচ্ছে নিজে ভালো আমল করা ও অন্যের ভালো আমলে সহযোগিতা করা। কুরআনের ভাষায়— “তোমরা পুণ্য এবং তাকওয়ার কাজে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করা।” সরাসরি সহযোগিতা সম্ভবপর না হলেও সাধ্যানুযায়ী কল্যাণ কামনা করাটাই ইসলামের শিক্ষা ও নির্দেশনা। “দ্বীন হলো কল্যাণ কামনার নাম।”

কল্যাণের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত আরেকটি জিনিসের নাম হলো অকল্যাণ। আলোর সঙ্গে যেমন অন্ধকারের সম্পর্ক, উৎকৃষ্টের সঙ্গে যেমন নিকৃষ্টের সম্পর্ক, কল্যাণের সঙ্গেও তেমনি অকল্যাণের সম্পর্ক। সম্পূর্ণ বিপরীতমুখি ও পরস্পরবিরোধী-দুটো জিনিস। তাই কল্যাণের ক্ষেত্রে যেমন সহযোগিতার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, অকল্যাণের ক্ষেত্রেও তেমনি সহযোগিতা প্রত্যাহার ও প্রতিবাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। “তোমরা গুনাহ এবং সীমালঙ্ঘনের ক্ষেত্রে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করো না।” “তুমি তোমার ভাইকে সাহায্য করো— জালিম অবস্থায় এবং মাজলুম অবস্থায়। সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেন, আমরা তাকে মাজলুম অবস্থায় সাহায্য করবো— এটা তো বোধগম্য; কিন্তু জালিম অবস্থায় তাকে কীভাবে সাহায্য করবো? তিনি বললেন, তুমি তার দু’হাত ধরে ফেলবে।” “যে-কোনো অন্যায় কাজ হতে দেখে, সে যেনো হাত দ্বারা তা পরিবর্তন করে দেয়। যদি না পারে, তাহলে মুখ দ্বারা। তাও যদি না পারে, তাহলে অন্তত অন্তর দ্বারা। আর এটা হলো ইমানের দুর্বলতম স্তর।

জুলুম অন্যায় এবং সীমালঙ্ঘন দেখে মৌনতা ও নীরবতা অবলম্বন করার কোনো সুযোগ নেই। আবার কল্যাণমূলক কাজ থেকে অযথা নিজের সহযোগিতা ও সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়ারও অবকাশ নেই। আমাদের শরিয়তে সৎকাজের নির্দেশের যতোটা গুরুত্ব, অসৎকাজ হতে বারণ করারও সমান গুরুত্ব; বরং ক্ষেত্রবিশেষ তার গুরুত্ব বেশি। কেননা অতিরিক্ত নেক আমল করা মুসতাহাব ও নফল স্তরের; পক্ষান্তরে গুনাহ থেকে বাঁচা ও বাঁচানো ফরজ কিবা ওয়াজিব স্তরের। আর স্পষ্ট যে, ফরজ বা ওয়াজিবের গুরুত্ব নফলের তুলনায় ঢেরগুণ বেশি। দাওয়াহ ও দাওয়াতের মেহনতের সঙ্গে জড়িত ভাইদের সামনে এ বিষয়গুলো অস্পষ্ট বা অজানা থাকার কথা নয়।

আরাকানিদের অবস্থা এখন কার অজানা! তাদের এই দুর্দিনে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলো এগিয়ে না এলেও অনেক দূর থেকে তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়া সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। এরদোয়ান ও তার স্ত্রী সম্প্রতি ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশে আগমন করেছেন। অবশ্যই তার এ উদ্যোগটি একটি মহতি উদ্যোগ। এজন্য তিনি ভালোবাসা ও প্রশংসা পাবার উপযুক্ত। অসহায় মুসলিমদের দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানো অতি উত্তম কাজ। এ তো এমনই এক উত্তম কাজ, যার বরকতে কাফির আবু তালিবের আযাব হবে জাহান্নামিদের মধ্যে সবচে হালকা আযাব।

সহিহ বুখারিতে এসেছে— “নিশ্চয়ই আল্লাহ এই দ্বীনকে পাপিষ্ঠ লোকের মাধ্যমে শক্তিশালী করবেন।” এজন্যই তো আমরা অগণিত মুসলিম ও অজস্র সাহাবা হত্যাকারী, পবিত্র হারামের ওপর আক্রমণকারী ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জালিম হাজ্জাজ বিন ইউসুফের বহু খেদমত ইসলামের পথে ব্যয়িত হতে দেখি। হাজ্জাজের কল্যাণমূলক কাজের অভাব নেই। ব্যক্তিগতজীবনেও তার মতো আমলদার মানুষ তার পরবর্তী সময়গুলোতে সত্যিই বিরল। হিন্দুস্তানে ইসলামের বিস্তারের পেছনেও তার অবদান অনস্বীকার্য।

হাজ্জাজের এসকল ভালো কাজ সেযুগের উলামা ও আল্লাহওয়ালা বুযুর্গদের সামনে অস্পষ্ট ছিলো না। কেউ কেউ হয়তো এসব আমলের মধ্য থেকে কোনো আমলের জন্য তার সপ্রতিভ প্রশংসাও করেছেন। তবে এতো এতো ভালো কাজ দেখে তাদের কেউই প্রতারিত হননি। কেউই তাই হাজ্জাজের জুলুমের ক্ষেত্রে সমর্থন বা সহযোগিতা প্রদান করেননি। অনেকে তো প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিবাদে পর্যন্ত সরব হয়েছেন। পরিশেষে জালিম হাজ্জাজের হাতে শাহাদাতের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে রাব্বে কারিমের সঙ্গে মিলনের উদ্দেশ্যে পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছেন।

এরদোয়ান রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যে কাজটা আমরা না করতে পারলেও অনেক দূর থেকে এসে তিনি করেছেন। এর পেছনে তার কী নিয়াত এবং কী উদ্দেশ্য তা আল্লাহই ভালো জানেন। মানুষের নিয়াত নিয়ে টানাহেঁচড়া করার অধিকার শরিয়ত কাউকে দেয়নি। হাঁ, তার নিয়ত যদি মন্দ হয়ে থাকে, কর্মে যদি ইখলাস না থাকে, তাহলে তার হিসাব আল্লাহ নেবেন। আমাদেরকে এই যিম্মাদারি দেয়া হয়নি। পক্ষান্তরে তার নিয়াত যদি ভালো হয়ে থাকে, আর তিনি ইমানের সঙ্গে পৃথিবী ত্যাগ করেন, তাহলে আল্লাহ তাকে ইন শা ল্লাহ উত্তম প্রতিদান দেবেন।

জাতিগতভাবে আমরা শাসকদের প্রতি দুর্বল। সারাদিন গালাগাল মারধর করার পরও রাতের গহিনে তারা যদি আমাদেরকে বুকের কাছে টেনে দু’ঠোঁটে মিষ্টি চুমোর একটি শুভ্র রেখা টেনে দেন, তাহলে আমরা পূর্বের সবকিছুই ভুলে যাই এবং প্রচণ্ড উত্তেজনায় নিজেদেরকে হারিয়ে ফেলি। নরেন্দ্র মোদি কিবা ট্রাম্পও যদি ইসলামের খেদমতে কোনো কিছু নিবেদন করে, তাহলে তাদেরকেও মাথায় তুলে জয়ধ্বনি দিতে আমাদের অধিকাংশই মোটেও দ্বিধা করবে না।

এরদোয়ানের এধরনের জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড, হোক তা ইমানের দাবিতে কিবা নিরেট মানবতাবোধের দাবিতে, তার অগণিত জুলুমের বৈধতা দেবে না, দিতে পারে না। মুসলমানদের হৃদয়ের ক্ষত এই সামান্য সান্ত্বনা বা প্রলেপে মুছে যাবে না, যেতে পারে না। অসংখ্য মায়ের বুক খালি করে অপর একদল মায়ের বিপদে তাদের পাশে দাঁড়ালেই কেবল প্রথমোক্ত মা’দের বুক পুনরায় ভরে উঠবে না। বিধবা নারীর কাছে তার স্বামী ফিরে আসবে না। শহিদ সন্তানেরা আর কখনোই আম্মু-আব্বু বলে ডেকে উঠবে না। হাজ্জাজের মতো এরদোয়ানের ভালো-মন্দ উভয় কাজের ফিরিস্তিই বড় দীর্ঘ। আলে সাউদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি হয়তো অনেকটা এমনই। কিন্তু তাদের ভালো কাজগুলো দেখে উল্লাসে মেতে ওঠা আর মন্দ কাজগুলোকে বৈধতা দিয়ে দেয়া কিবা সেব্যাপারে সম্পূর্ণ নীরবতা অবলম্বন করা কখনো মুমিনি শান হতে পারে না। সালাফের রীতিও কখনো এমন ছিলো না। আলিম হয়েও এখন যদি কেউ এমন ভুল করে বসেন, তাহলে অবশ্যই তিনি সালাফের মানহাজ থেকে সরে এসেছেন, হোক তা জেনেবুঝে কিবা একান্তই অবচেতনে।

এরদোয়ানের কাজগুলো নিয়ে একদল বেশি বাড়াবাড়িতে লিপ্ত। পক্ষান্তরে আরেকদলও ইনসাফের পরিচয় না দিয়ে প্রচণ্ড শৈথিল্যের পরিচয় দিচ্ছে, যা এসময়ে অন্তত কাম্য ছিলো না। মুসলিম প্রতারিত হয় না। মুসলিম এক গর্তে দু’বার দংশিত হয় না। মুসলিম সদা সতর্ক, চৌকান্ন। আমর ইবনুল আ’সের নির্দেশের মতো— “আনতুম ফি রিবাতিন দায়িমিন।” তোমরা সদা সতর্ক সীমান্তপ্রহরী। তাই গভীর রাতের একটি মিষ্টি চুমোতেই সকল ক্ষত ভুলে প্রচণ্ড উত্তেজনায় মেতে ওঠা ও মাজলুম মানবতাকে রেখে একাকী বা সম্মিলিত অভিসারে গমন করা নিশ্চয়ই কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না। যারা উম্মাহর প্রতিনিধিত্ব করে, তাদের থেকে এমন কাজ প্রকাশ পেলে নিশ্চয়ই তা তাদের অদূরদর্শিতারই প্রমাণ বহন করে।

 

প্রসঙ্গ: রোহিঙ্গা নারীর বিয়ের ব্যাপারে সেক্যুলার সরকারের অবস্থানের পর্যালোচনা 

 

এবার আসি রোহিঙ্গা নারীর বিয়ে প্রসঙ্গে। প্রথম থেকেই আমার কাছে মনে হচ্ছিলো যে, বিয়েটা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। আর বিয়ে কোনো করুণা বা আর্থিক সহায়তারও নাম নয়। স্ত্রী স্ত্রীই; তিনি ঘরের কাজের লোক নয়। স্ত্রীর থাকতে হয় সম্পূর্ণ স্বাধীনতা। তার হাতে থাকে ঘরের নিয়ন্ত্রণ। তাই তো তিনি পুরুষরাজ্যের রানী এবং সম্রাজ্ঞী। বিয়েটা একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়। বরং এটি একটি পারিবারিক এবং ক্ষেত্রবিশেষ সামাজিক ব্যাপার। বিয়ে ব্যক্তিগত ব্যাপার হলে আমার মতো অবিবাহিতরা তো আর এতোকাল তাসবিহ হাতে বসে বসে প্রতীক্ষার প্রহর গুনতো না।

সংসার সুখী হওয়ার জন্য স্ত্রীর রূপ-লাবণ্য থেকেও যে জিনিসটি অধিক গুরত্বের দাবি রাখে, তা হলো তার স্বভাব-প্রকৃতি এবং মন-মানসিকতা। কতো সুন্দর-সুন্দরীর সংসার ভাঙ্গে শুধু বনিবনা না হওয়ার কারণে। গরিব-দুঃখীদের মেয়ে হলেই যে তার সাথে বনিবনা হয়ে যায়, বিষয়টা তো এমন নয়। বনিবনা সম্পূর্ণ আলাদা একটি বিষয়। কতো সাহাবির সংসার ভেঙ্গেছে শুধু এই জিনিসের অভাবে। এমনকি খোদ রাসুলের পালকপুত্র যায়দ এবং ফুফাতো বোন যায়নাব বিনতে জাহাশের সংসারই তো ভাঙ্গলো শুধু এ কারণে।

অঞ্চলভেদে মানুষের রুচি-প্রকৃতি ভিন্ন হয়ে থাকে। ভারতের কোনো নারীকে বিয়ে করে সংসার আলোকিত করতে চেয়েছে, পরিশেষে সংসারে চিরতরে আগুন জ্বলেছে, এমন অসংখ্য পরিবারের দৃষ্টান্ত আমার চোখের সামনে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের এক নারীকে বিয়ে করে দেশের উল্লেখযোগ্য পর্যায়ের একজন আলিম সন্তান হবার পরও আজও বুকভরা আক্ষেপ এবং পরিতাপে ভুগছনে। বিষয়টা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। হাঁ, প্রত্যেক বিষয়েই ব্যতিক্রম কিছু থাকে। এক্ষেত্রেও যে ব্যতিক্রম নেই তা নয়। তবে বিধান বর্ণনার ক্ষেত্রে সাধারণ অবস্থার বিবেচনা করা হয়; ব্যক্তিক্রম সুরতের নয়।

অনেক রোহিঙ্গার সাথে আমি মিশেছি। তাদের স্বভাব-প্রকৃতির সম্পূর্ণ ভিন্নতা আমি স্বচক্ষে দেখেছি। তাই ব্যক্তিগতভাবে যারাই রোহিঙ্গা নারীর বিয়ের ব্যাপারে পরামর্শ চেয়েছেন, কাউকেই আমি ইতিবাচক পরামর্শ দিতে পারিনি। তাই বলে নাও করিনি। কেননা কেউ যদি সরেজমিন প্রত্যক্ষ করে সুনিশ্চিতভাবে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, সে সহজেই মানিয়ে নিতে পারবে, তাহলে তাতে আমার কী সমস্যা! বিশেষ করে আরাকানের পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে যারা বাস করছে, তাদের অনেকের সাথে রোহিঙ্গা নারীদের স্বভাব-প্রকৃতিও মিলে যেতে পারে। তাই এক্ষেত্রে পাইকারিভাবে নিষিদ্ধতা আরোপ করারও কোনো অর্থ হয় না।

পূর্বেই বলে এসেছি, বিয়ে কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। তাছাড়া বিয়ের ক্ষেত্রে আমরা যে বেছে বেছে ভালো মেয়েগুলোকে বিয়ের জন্য নির্বাচন করবো, এতে তো বোধহয় কারো সন্দেহ পোষণ করার কথা নয়। পরিস্থিতির শিকার হয়ে তারাও হয়তো এক্ষেত্রে অসম্মতি প্রকাশ করবে না। কারণ অসম্মতি প্রকাশ করেই বা কী হবে, আখের মেয়ের জীবন ও ইজ্জত লম্পটদের লোলুপ দৃষ্টি থেকে বাঁচাতে পারবে— এই গ্যারান্টিই তো সেসব পরিবারের নেই! তাহলে কেনোই বা তারা না করবেন! কোন অধিকারেই বা করবেন!!

কিন্তু যে বিষয়টি লক্ষণীয়, তারা এদেশে চিরকাল থাকার জন্য আসেনি। পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিলে তাদের অনেকেই স্বদেশে ফিরে যেতে চাইবেন; বিশেষত যাদের ভিটেবাড়ি ও ক্ষেত-খামার রয়েছে। তখন বিষয়টি কেমন হয়ে দাঁড়াবে? তাছাড়া রোহিঙ্গা নারীদের থেকে আমাদের যে সন্তানগুলো জন্ম নেবে, তাদেরকে সুষ্ঠুভাবে তারবিয়াত করা কি আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে? আর এটা তো স্বীকৃত কথা যে, মায়ের কোলই হলো সন্তানের প্রথম বিদ্যাপীঠ।

আরেকটি বিষয় হলো, রোহিঙ্গা যুবকদেরও তো বিয়ের প্রয়োজন রয়েছে। তাদের ভালো ভালো মেয়েগুলোকে যদি আমরাই নিয়ে নেই, তাহলে তারা কী করবে? আর কোন বাঙালি নারীই বা তাদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইবে?

সবকিছুর পরও আমরা মনে করি, এটা একেবারে ব্যক্তিগত একটা বিষয়। সবদিক বিবেচনা করে কেউ যদি ইতিবাচক সিদ্ধান্তে উপনীত হয় এবং সে কোনো রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করার আগ্রহ প্রকাশ করে আর রোহিঙ্গা পরিবারও তাদের ওপর কোনোপ্রকার চাপ প্রয়োগ বা ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করা ছাড়া প্রশান্তচিত্তেই তা মেনে নেয়, তাহলে সেক্ষেত্রে অন্য কারো আপত্তি করাটা মোটেও যৌক্তিক নয়। হলুদ সাংবাদিকদের জন্য এটাকে ‘বিয়ে করার খায়েসে সহযোগিতা’ শিরোনামে উল্লেখ করার কোনো অধিকার আছে বলে আমরা মনে করি না।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যদি ক্রিস্টিনাকে বিয়ে করতে পারে, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ যদি ক্রিস পার্সিকে বিয়ে করে সেক্সুয়াল লাইফ গড়তে পারে, তাহলে রোহিঙ্গা বিয়ের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধতার আইন করে পরিপত্র জারি করাটা নিতান্ত অমানবকিতা এবং হাস্যকর গালগল্প ছাড়া আর কীইবা হতে পারে?! নাকি এক্ষেত্রেও রোহিঙ্গারা মুসলিম জনপদবাসী হওয়ায় তাদের ক্ষেত্রে আচরিত হবে দ্বিমুখী নীতি?! মুসলিমরা কি চিরকাল অবহেলিতই থেকে যাবে?! মুসলিম বেদে জনপদের মতো রোহিঙ্গাদের সাথেও কি আমাদের আচরণে বরাবরই তাচ্ছিল্য ও ঘৃণাই প্রকাশ পাবে?! শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এতো রিস্ক নিয়ে যে ভাইটি কোনো রোহিঙ্গা মেয়েকে বিয়ে করার জন্য আগ্রহী হয়েছে, তার সাথে তাগুত সরকার এবং হলুদ মিডিয়া যে জুলুমের আচরণ করছে, তার হিসেব কিন্তু পাই পাই করে মহান রবের কাঠগড়ায় অবশ্যই তাদেরকে দিতে হবে। সেদিনের জন্য তারা মানসিকভাবে প্রস্তুত আছে তো?! নিশ্চয়ই সেদিন এমন দিন, যেদিন চাটুকার মৌলবিরাও তাদের প্রভু শাসকদের কোনোই উপকারে আসবে না। সেদিন প্রত্যেকের হিসাব তা নিজেকেই দিতে হবে। এরপরই ফায়সালা হবে স্বপ্নিল জান্নাতের বা ভয়ানক জাহান্নামের।

 

 

Share This