শুধু পাঁচটি বিষয়ে মাযহাবের ইমামের তাকলিদ করা বৈধ।

 

  • শরিয়তের ইজতিহাদি ইখতিলাফি শাখাগাত বিধানগুলোর ক্ষেত্রে
  • সেই বিধানগুলোর কার্যকারণের ক্ষেত্রে
  • সেই বিধানগুলোর শর্তসমূহের ক্ষেত্রে
  • সেই বিধানগুলোর প্রতিবন্ধকতার ক্ষেত্রে
  • কার্যকারণ শর্ত ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী দলিল-প্রমাণসমূহের ক্ষেত্রে

 

পাঠকদের বোঝার সুবিধার্থে এখানে আমরা বিষয়-পাঁচটির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা তুলে ধরছি।

 

শরিয়তের ইজতিহাদি ইখতিলাফি শাখাগাত বিধিবিধান

 

শরিয়তের বিধানগুলো দুই প্রকার:

১. মৌলিক বিধান, যেমন ঈমানের মৌলিক বিষয়গুলো, অর্থাৎ আল্লাহ তার রাসুল ফিরিশতা তার অবতীর্ণ কিতাবসমূহ শেষ দিবস তাকদির ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি ইমান। তেমনি সালাত সিয়াম হজ যাকাত ইত্যাদির ফরযিয়াত।

২. শাখাগত বিধান, যেমন সালাত সিয়াম হজ যাকাত আদায়ের পন্থা ও সেগুলোর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য বিধিবিধান। যেমন যাকাত কখন ফরজ হবে? কখন তা আদায় করা জরুরি হবে? কাকে কাকে তা আদায় করা যাবে? কোনো কোনো প্রতিবন্ধকতার কারণে যাকাত আদায় না করার অনুমতি পাওয়া যাবে?

শরিয়তের মৌলিক বিষয়াদির ক্ষেত্রে কোনো ইমামের তাকলিদ বৈধ নয়। তাই কেউ যদি এভাবে বিশ্বাস পোষণ করে যে, ইমাম আবু হানিফা বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ, তাই আমি পাঁচ ওয়াক্ত সালাতকে ফরজ হিসেবে স্বীকার করি। তিনি যদি বলতেন, এই সালাতগুলো ফরজ নয়, তাহলে আমি কিছুতেই এগুলোকে ফরজ মনে করতাম না।

এমন আকিদা কেউ পোষণ করলে তার ইমান আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়। ইমামগণের তাকলিদ করা যায় শুধু শাখাগত বিধিবিধানের ক্ষেত্রে। তাও আবার শুধু শাখাগত হলেই হবে না; বরং শাখাগত হওয়ার পাশাপাশি ইজতিহাদিও হতে হবে। আবার ইজতিহাদি হয়ে মুজমা আলাইহি হলেও হবে না; বরং মুখতালাফ ফিহি হতে হবে।

 

ইজতিহাদি মাসআলা কাকে বলে?

শরিয়তের মাসআলাসমূহ দুই প্রকারের:

১. মানসুস আলাইহি

২. মুজতাহাদ ফিহি

‘‘মানসুস আলাইহি’’ বলা হয়, যাতে কুরআন কারিম বা সুন্নাতে নববিয়াহর কোনো অকাট্য ও দ্ব্যর্থহীন ‘নস’ বিদ্যমান থাকে। এ ধরনের মাসাইল ‘কাতয়ি’ (অকাট্য ও সংশয়হীন) হয়ে থাকে এবং অবশ্যই তা ‘মুজমা আলাইহি’ (সর্বসম্মত)ও হয়ে থাকে। এ বিষয়ে কোনো ইমাম, ফকিহ বা আলিমের কোনো মতভেদ থাকে না। যদি কেউ জেনেশুনে দ্বিমত করে তবে তিনি আলিমই গণ্য হবেন না; বরং তার সাথে ‘ফাসিক’ বিশেষণ যুক্ত হবে।

আর ‘‘মুজতাহাদ ফিহি’’ বলা হয়, যাতে হয়তো কোনো নস নেই বা থাকলেও তা হয়তো এমন স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন নয়, যাতে একাধিক মর্মের সম্ভাবনা নেই, কিংবা তা প্রামাণিকতার দিক থেকে এমন অকাট্য ও শক্তিশালী নয়, যার সুবুত ও প্রামাণিকতা হাদিস-বিচারকগণের কাছে সর্বসম্মত। এ ধরনের বিষয়ে ফিকহ-ফতোয়ার ইমামগণ ইজতিহাদের ভিত্তিতে ফয়সালা করেন। এই ফয়সালায় তারা সবাই একমত থাকলে বিষয়টি ‘মুজতাহাদ ফিহি’ (ইজতিহাদি) হওয়া সত্ত্বেও ‘মুজমা আলাইহি’ গণ্য হবে। আর তাদের মাঝে মতানৈক্য হলে বিষয়টি হবে ‘মুজতাহাদ ফিহি’’ এবং ‘মুখতালাফ ফিহি’’।

তো উপরিউক্ত আলোচনার আলোকে প্রতীয়মান হলো যে, কোনো বিধান কেবল মৌলিক না হয়ে শাখাগত হলেই তাতে তাকলিদ করা বৈধ হয়ে যায় না। বরং শাখাগত হওয়ার পাশাপাশি বিধানটি ইজতিহাদিও হতে হয়। আবার শুধু ইজতিহাদি হলেই হয় না; বরং পাশাপাশি মুখতালাফ ফিহিও হতে হয়।

কেননা যে বিষয়টা ইজতিহাদি হওয়া সত্ত্বেও মুজমা আলাইহি, তাতে তো ব্যক্তিবিশেষের তাকলিদ করা যায় না। কারণ যে বিষয়টি গোটা উম্মাহর কাছে স্বীকৃত, সেক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষের দিকে তো তার নিসবত করা অর্থহীন। তাই এ-কথা বলাটা সঙ্গত নয় যে, সালাত আদায় করার জন্য নাজাসাত এবং হাদাস থেকে তাহারাত অর্জন করা হানাফি মাযহাব মতে জরুরি। কেননা এ বিধানটি হানাফি মাযহাবের সঙ্গে বিশেষিত নয়; বরং এটা তো সর্বজনস্বীকৃত ও সর্বজনবিদিত মাসআলা। এসকল সর্বজনস্বীকৃত মাসআলাকে ‘কাতয়ি’ তথা অকাট্য ও সংশয়হীন মাসআলা হিসেবে গণ্য করা হয়। কেননা উম্মাহর ইজমা কোনো বিধানের ওপর অকাট্যতা আরোপ করে।

সেসকল মাসআলাকেই নির্দিষ্ট কোনো ইমামের সাথে বিশেষিত করে সেক্ষেত্রে তার তাকলিদ করা যাবে, যা তার স্বতন্ত্র ইজতিহাদি বৈশিষ্ট্য। যেমন ইমাম আবু হানিফা রহ.-এর মতে বিতিরের সালাত ওয়াজিব। এটা তার স্বতন্ত্র ইজতিহাদি বৈশিষ্ট্য। এক্ষেত্রে (বিতিরের সালাত সুন্নত নয়, বরং ওয়াজিব হওয়ার বিষয়ে) তার তাকলিদ করা যাবে। কিন্তু বিতিরের সালাত আদায় করার বৈধতা গোটা উম্মাহর মতানুযায়ীই প্রমাণিত। এটি একটি সর্বজনস্বীকৃত বিষয়। তার বৈধতার ব্যাপারে কারোরই মতানৈক্য নেই। তাই এ কথা বলা যে, “ইমাম আবু হানিফার মতে বিতিরের সালাত বৈধ ও এ মতের ক্ষেত্রে আমি তার তাকলিদ করি” নিরেট অজ্ঞতা বৈ কিছু নয়।

তেমনি যরুরিয়াতে দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোতেও কারো তাকলিদ করা যায় না; যদিও সেই বিষয়গুলো শাখাগত বিধিবিধানের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে।

যরুরিয়াতে দ্বীন কী?

‘যরুরিয়াতে দ্বীন’ বলা হয় সে সকল বিষয়কে, যা সন্দেহাতীতভাবে যুগপরম্পরায় আমাদের পর্যন্ত পৌঁছেছে এবং উম্মতের সাধারণ দ্বীনদার শ্রেণিও যে সকল বিষয়কে নবিজির শিক্ষা বলে জানে। আলিমগণের পরিভাষায় এ ধরনের বিষয়কে ‘যরুরিয়াতে দ্বীন’ বলা হয়। যেমন, আল্লাহ একমাত্র মাবুদ, তার কোনো শরিক নেই। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রাসূল। কেয়ামত ও আখেরাত সত্য। কোরআন আল্লাহ তাআলার নাযিল করা কিতাব। পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরজ। পবিত্র মক্কা নগরীর কাবাঘর হলো মুসলমানদের কেবলা ইত্যাদি। এগুলো এমন বিষয়, ইসলাম ও তার নবি সম্পর্কে যার সামান্য জানাশোনা আছে, সে-ই নিশ্চিতভাবে জানে যে, নবিজি উম্মতকে এসকল জিনিস শিক্ষা দিয়েছেন। এতে সন্দেহ পোষণের কোনো অবকাশ নেই। তো মুসলমান হওয়ার জন্য এজাতীয় বিষয়ের অস্বীকার থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। কেননা এ ধরনের বিষয় অস্বীকার করার অর্থ হলো সরাসরি নবীজীর তালীম ও হেদায়াতকে অস্বীকার করা। যার পর ইসলামের সঙ্গে কোনো সম্পর্কই আর থাকে না।

‘যরুরিয়্যাতে দ্বীনে’র অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি বিষয় ফরজ হতে হবে, এমনটা জরুরি নয়। বরং কোনো সুন্নত বিষয়ও ‘যরুরিয়াতে দ্বীনে’র অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। যে সুন্নত বিধানের জ্ঞান সকলের আছে, সাধারণ-অসাধারণ সকলে যার ব্যাপারে জানে, তাও ‘যরুরিয়াতে দ্বীনে’র অন্তর্ভুক্ত। উদাহরণস্বরূপ, মেসওয়াক।

যরুরিয়াতে দ্বীনের সংজ্ঞার ক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষণীয়। আল্লামা কাশ্মীরি রহ. বলেন, “ব্যাপক প্রসিদ্ধির মাপকাঠি হলো, জনসাধারণের সকল শ্রেণির মধ্যে সেই দ্বীনি বিষয়াবলির জ্ঞান প্রসিদ্ধি লাভ করা। সে ব্যাপারে প্রত্যেক শ্রেণির প্রতিটি ব্যক্তির জ্ঞান থাকা জরুরি নয়। তেমনিভাবে জনসাধারণের সেই শ্রেণিরও জানা জরুরি নয়, যারা দ্বীন এবং দ্বীনি বিষয়াবলির প্রতি কখনো ভ্রুক্ষেপই করে না। বরং জনসাধারণের এমন প্রত্যেক শ্রেণির মধ্যে তার জ্ঞান প্রসার লাভ করা জরুরি, যারা দ্বীনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে; চাই তারা আলিম হোক, কিবা অ-আলিম।”

 

সারকথা হলো, শরিয়তের ইজতিহাদি ইখতিলাফি শাখাগত বিধিবিধানের ক্ষেত্রেই কেবল কোনো মাযহাবের ইমামের তাকলিদ করা যায়।

 

শরিয়তের ইজতিহাদি ইখতিলাফি শাখাগাত বিধিবিধানের কার্যকারণ

শরিয়তের প্রতিটি বিধানের হুকুম আরোপিত হওয়ার জন্য কোনো ‘সাবাব’ (Cause) হেতু বা কার্যকারণ থাকা জরুরি। ‘সাবাবে’র অস্তিত্ব ঘটলেই কেবল তার সাথে সম্পৃক্ত বিধানটির হুকুম আরোপিত হয়; অন্যথায় নয়। এই ‘সাবাব’গুলোর মধ্যে কিছু রয়েছে সর্বসম্মত আর কিছু রয়েছে মতবিরোধপূর্ণ।

সর্বসম্মত ‘সাবাবে’র উদাহরণ হলো, রমজানের চাঁদ দেখা যাওয়া সিয়াম পালনের অপরিহার্যতার ‘সাবাব’। সূর্য মধ্যাকাশ থেকে হেলে যাওয়া যোহরের সালাত অপরিহার্য হওয়ার ‘সাবাব’। অন্যের মালিকানাধীন কোনো বস্তু নষ্ট করে ফেলা তার জরিমানা অপরিহার্য হওয়ার ‘সাবাব’।

মতবিরোধপূর্ণ ‘সাবাবে’র উদাহরণ হলো, ইমাম মালিক রহ.-এর মতানুযায়ী একফোঁটা দুগ্ধপান বিয়ে হারাম হওয়ার ‘সাবাব’। পক্ষান্তরে ইমাম আবু হানিফা রহ.-এর সে বিষয়ে দ্বিমত রয়েছে। যদি দুই ‘কুল্লা’র চেয়ে স্বল্প পরিমাণবিশিষ্ট পানিতে নাপাকি পড়ে আর এর কারণে পানি বিবর্ণ না হয়ে যায়, তাহলে ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম শাফেয়ির মতে এই নাপাকির পতিত হওয়াটা পুরো পানি নাপাক হয়ে যাওয়ার ‘সাবাব’। পক্ষান্তরে ইমাম মালিক এক্ষেত্রে ভিন্নমত পোষণ করেন।

শরিয়তের ইজতিহাদি ইখতিলাফি শাখাগাত বিধিবিধানের শর্তসমূহ

শরিয়তের প্রতিটি বিধান অস্তিত্বে আসার জন্য এক বা একাধিক শর্ত থাকা জরুরি। শর্তগুলো যখন পাওয়া যায়, তখনই সেই বিধান অস্তিত্ব লাভ করে। শর্তগুলো না পাওয়া গেলে সেই বিধানও অস্তিত্ব লাভ করতে পারে না। এই শর্তগুলোর মধ্যে কিছু রয়েছে সর্বসম্মত আর কিছু রয়েছে মতবিরোধপূর্ণ।

সর্বসম্মত শর্তের উদাহরণ হলো, যাকাতের জন্য বছর অতিক্রান্ত হওয়া, সালাতের জন্য তাহারাত হাসিল করা।

মতবিরোধপূর্ণ শর্তের উদাহরণ হলো, বিয়ের মধ্যে ওয়ালি এবং সাক্ষীর বিষয়টা।

 

শরিয়তের ইজতিহাদি ইখতিলাফি শাখাগাত বিধিবিধানের প্রতিবন্ধকতাসমূহ

শরিয়তের বিধানগুলোর কিছু কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। যেই প্রতিবন্ধকতাগুলো দেখা দিলে সেই বিধানগুলোর হুকুম সাময়িকভাবে বা স্থায়ীভাবে রহিত হয়ে যায় এবং ক্ষেত্রবিশেষ তার পরিবর্তে তার কোনো বিকল্প অপরিহার্য হয়। এই প্রতিবন্ধকতাগুলোর মধ্যে কিছু রয়েছে সর্বসম্মত আর কিছু রয়েছে মতবিরোধপূর্ণ।

সর্বসম্মত প্রতিবন্ধকতার উদাহরণ হলো, নারীদের মাসিক ঋতুস্রাব সালাত সাওম সহ আরো কিছু বিধানের জন্য প্রতিবন্ধক। উন্মাদ হয়ে যাওয়া বা বেহুঁশ ও অচেতন হয়ে যাওয়া ‘তাকলিফ’ (শরিয়ত পালনের অপরিহার্যতা)-এ রজন্য প্রতিবন্ধক।

মতবিরোধপূর্ণ প্রতিবন্ধকতার উদাহরণ হলো, নাজাসাত সালাতের জন্য প্রতিবন্ধক। তেমনি ঋণ যাকাত আদায়ের অপরিহার্যতার জন্য প্রতিবন্ধক।

 

শরিয়তের ইজতিহাদি ইখতিলাফি শাখাগাত বিধিবিধানের কার্যকারণ শর্ত ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী প্রমাণসমূহ

আদালতে মাননীয় বিচারকগণ কোনো সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য বা কোনো বিধান আরোপের জন্য সাক্ষী-স্বীকারোক্তি সহ অনেক দলিল-প্রমাণের প্রতি মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন। তো সেসকল দলিল-প্রমাণের ক্ষেত্রেও তাকলিদের বিষয়টি চলে আসে। এই দলিল-প্রমাণগুলোর মধ্যে কিছু রয়েছে সর্বসম্মত আর কিছু রয়েছে মতবিরোধপূর্ণ।

সর্বসম্মত দলিল-প্রমাণের উদাহরণ হলো, সম্পদের ক্ষেত্রে দু’সাক্ষী এবং যিনা প্রমাণের জন্য চার সাক্ষী। তেমনি সকল ক্ষেত্রে স্বীকারোক্তি প্রদানের উপযুক্ত ব্যক্তি থেকে যথাস্থানে প্রদত্ত স্বীকারোক্তি, যদি না স্বীকারোক্তি প্রদানকারী ব্যক্তি কোনো কারণে নিজ অভিমত প্রত্যাহার করে নেয়।

মতবিরোধপূর্ণ দলিল-প্রমাণের উদাহরণ হলো, দুই সাক্ষীর পরিবর্তে এক সাক্ষী এবং কসম, হত্যা ও জখমের ক্ষেত্রে শিশুদের সাক্ষ্যগ্রহণ, পরবর্তীতে অভিমত প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে এমন স্বীকারোক্তি, ‘কাসামাহ’র মাধ্যমে কিসাস আরোপ করা ইত্যাদি।

তো এসকল দলিল-প্রমাণের মাধ্যমে বিচারকের কাছে কার্যকারণ প্রমাণিত হয়, যেমন হত্যা, শর্ত প্রমাণিত হয়, যেমন সমতা, প্রতিবন্ধকতা থাকা-না থাকা প্রমাণিত হয়, যেমন পূর্বের স্বামীর থেকে মুক্তি ইত্যাদি।

পুনশ্চ: 

তো এই পাঁচটি বিষয় এমন, যেক্ষেত্রে মাযহাবের ইমামগণের তাকলিদ করা হয়। মুজতাহিদ নয় এমন ব্যক্তির জন্য এসকল ক্ষেত্রে কোনো মুজতাহিদ ইমামের তাকলিদ করা একান্ত অপরিহার্য। তাকলিদের ক্ষেত্র এই পাঁচটিই। তাই যারা মাযহাবকে দ্বীন বলে ও মুকাল্লিদদেরকে মুশরিক বলে, সেসকল ভাইদের ব্যাপারে বলতে হয়, তারা যে মূর্খতার কোন অতল সাগরে বাস করেন, তা আল্লাহই ভালো জানেন। কারো ব্যাপারে প্রোপাগান্ডা ছড়াতে গেলেও তো কিছু বিদ্যা-বুদ্ধির দরকার হয়। অন্যথায় শেষাবধি নিজেকেই অপমানিত হতে হয়, বস্তা বস্তা উপহাস সয়ে নিতে হয়।

পরিশেষে মালেকি মাযহাবের প্রখ্যাত ফকিহ ইমাম কারাফি রহ.-এর ভাষায় মাযহাবের সংজ্ঞা উল্লেখ করে আজকের লেখার ইতি টানছি। জাযাকুমুল্লাহ।

إذا قيل لك: ما مذهب مالك؟ فقل: ما اختص به من الأحكام الشرعية الفروعية الاجتهادية، وما اختص به من أسباب الأحكام والشروط والموانع والحجاج المثبتة لها

 

আরো পড়ুন:

তাকলিদ কী ও কেনো

মাযহাব সীমালঙ্ঘন ও শৈথিল্যের কবলে

এসো তাওহিদের ভিত্তিতে ঐক্য গড়ি 

Share This